মঙ্গলবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
সোমবারের আরেকটি ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের পর মঙ্গলবার GBP/USD পেয়ারের মূল্য কারেকশন করে নিম্নমুখী হয়েছে। সোমবার বা মঙ্গলবার — কোনো দিনেই এই ধরনের মুভমেন্টকে সমর্থন দেয়ার মতো কোনো মৌলিক বা সামষ্টিক অর্থনৈতিক কারণ ছিল না। এমনকি ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষ থেকেও উল্লেখযোগ্য কোনো ঘোষণা আসেনি। তবে এখানে মনে রাখার বিষয় হচ্ছে, ডলার বিক্রির যৌক্তিকতা দিতে মার্কেটের ট্রেডারদের এখন আর কোনো খবরের প্রয়োজন হচ্ছে না। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট এবং সদ্য পুনর্নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্টের বাণিজ্য নীতিমালাই মার্কিন ডলারের ধারাবাহিক দরপতনের জন্য যথেষ্ট কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ট্রেডাররা এখন আর নিয়মিত সামষ্টিক প্রেক্ষাপটের দিকেও আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। মৌলিক অনুঘটক এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক নীতিমালাও উপেক্ষিত হচ্ছে। এইবার, 1.3440 লেভেল এই পেয়ারের মূল্যের আরও ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের সম্ভাবনা থামিয়ে দিয়েছে, তবে এখন কেউ কি সত্যিই শক্তিশালী ডলারের মূল্য বৃদ্ধির পক্ষে বাজি ধরবেন?
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
মঙ্গলবার, ইউরোর মতোই 5-মিনিটের টাইমফ্রেমে পাউন্ডের চারটি সেল সিগন্যাল গঠিত হয়েছে। পাউন্ডের মূল্য 1.3421–1.3440 এরিয়া থেকে চারবার বাউন্স করলেও কখনোই নিকটতম টার্গেট লেভেল 1.3365 পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেনি। ফলে, নতুন ট্রেডাররা সারাদিন জুড়ে ক্ষতির সম্মুখীন না হয়েও শর্ট পজিশন ওপেন করতে পারতেন। তবে, শুধুমাত্র ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করার মাধ্যমে মুনাফা করা গেছে।
বুধবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, অনেক আগেই GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু হতে পারত, কিন্তু মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো কেবলমাত্র ট্রাম্পের পদক্ষেপের দিকে মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করছে। এর ফলে, পাউন্ড স্টার্লিংয়ের দর স্থিরভাবে ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। অর্থাৎ, এই পেয়ারের মূল্যের ভবিষ্যৎ মুভমেন্ট এখনো পুরোপুরিভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং তার সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে — এবং অন্য কিছু এতে প্রভাব ফেলছে না। ভবিষ্যতে হয়তো মার্কেটের ট্রেডারদের মনোভাব পরিবর্তিত হতে পারে, তবে এখনো এর কোনো ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে না।
বুধবার, GBP/USD পেয়ারের মূল্য কিছুটা রিট্রেস করে নিম্নমুখী হতে পারে, তবে যদি পাউন্ডের মূল্যের আরেকটি অকারণ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যায়, তাহলেও তা অবাক করার মতো কিছু হবে না। এখন পুরোপুরিভাবে টেকনিক্যাল ভিত্তিতে ও গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলোর ওপর নির্ভর করে ট্রেডিং করা হচ্ছে।
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে বর্তমানে নিম্নোক্ত লেভেলগুলোর ভিত্তিতে ট্রেডিং করা যেতে পারে: 1.2848–1.2860, 1.2913, 1.2980–1.2993, 1.3043, 1.3102–1.3107, 1.3145–1.3167, 1.3203, 1.3289–1.3297, 1.3365, 1.3421–1.3440, 1.3488, 1.3537, 1.3580–1.3598। বুধবার যুক্তরাজ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না। তবে যুক্তরাষ্ট্রে গুরুত্বপূর্ণ জিডিপি এবং ADP কর্মসংস্থান সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। তবুও, এই প্রতিবেদনগুলো যতই গুরুত্বপূর্ণ হোক না কেন, মার্কেটের ট্রেডাররা বর্তমানে সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের প্রায় ৯০% উপেক্ষা করছে। প্রথম প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মন্থরতার ইঙ্গিত পাওয়া যেতে পারে — যা ডলার বিক্রির আরেকটি কারণ হিসেবে কাজ করতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।