শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
শুক্রবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের সাইডওয়েজ ট্রেডিং অব্যাহত ছিল। মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো সকল সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন উপেক্ষা করে চলেছে, এবং গত সপ্তাহে আবারও এই স্পষ্ট বাস্তবতা নিশ্চিত করা গেছে। এমনকি গৌণ গুরুত্বসম্পন্ন প্রতিবেদনগুলো বিবেচনা না করেও, আমরা মার্কেটে শুধু সোমবার এবং মঙ্গলবার মুভমেন্ট দেখতে পেয়েছি। স্বাভাবিকভাবেই, এই দুটি ক্ষেত্রেই এই মুভমেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কারণে ঘটেছে। তবে এবার এগুলো বাণিজ্য সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে নয়, বরং জেরোম পাওয়েলকে কেন্দ্র করে ঘটেছে। প্রথমে, ট্রাম্প বলেন যে পাওয়েলকে বরখাস্ত করা উচিত, এবং মার্কেটের ট্রেডাররা সঙ্গে সঙ্গে মার্কিন ডলার বিক্রি করা শুরু করে। পরে ট্রাম্প বলেন তিনি আর পাওয়েলকে বরখাস্ত করার পরিকল্পনা করছেন না, ফলে ডলারের দর আগের অবস্থানে ফিরে আসে। এই মুভমেন্ট বাদ দিলে, বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধ সম্পর্কিত কোনো খবর ছাড়াই পেয়ারটির মূল্যের সাইডওয়েজ মুভমেন্ট চলমান রয়েছে। এই সাইডওয়েজ চ্যানেলটি 1.1275 থেকে 1.1424 এর মধ্যে স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা যায়।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
5 মিনিটের টাইমফ্রেমে পরিলক্ষিত মুভমেন্টগুলো তেমন আকর্ষণীয় ছিল। কখনো এই পেয়ারের মূল্য আলোর গতিতে মুভমেন্ট প্রদর্শন করে, আবার কখনো স্পষ্টভাবে ফ্ল্যাট ট্রেডিং দেখা যায়। স্পষ্টতই বুধবার, বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবারে এই পেয়ারের মূল্য ফ্ল্যাট রেঞ্জে ছিল, এমনকি সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফলও মূল্যের শক্তিশালী মুভমেন্ট ঘটাতে পারেনি। তবুও, শুক্রবার 1.1330 লেভেল থেকে মূল্য দুইবার রিবাউন্ড করেছে, যদিও কোনো রিবাউন্ডই নির্ভুল ছিল না। তাই, নতুন ট্রেডাররা প্রতিবার বাউন্সের ক্ষেত্রে লং পজিশন ওপেন করতে পারতেন, তবে ইউরোপীয় এবং মার্কিন সেশনের মধ্যে এই পেয়ারের মূল্যের ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতার মাত্রা ছিল মাত্র 67 পিপস, এবং মূল্য একবারও 1.1413 টার্গেট লেভেল পর্যন্ত পৌঁছেনি।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে। গত সপ্তাহটি নতুন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার সাথে ট্রেডিং, তবে মঙ্গলবার ট্রাম্প এই পেয়ারের দরপতন ঘটান। এই মুভমেন্ট উপেক্ষা করলে দেখা যাচ্ছে যে গত দুই সপ্তাহ ধরে মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছে। সামগ্রিকভাবে, মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো মার্কিন ডলার এবং যুক্তরাষ্ট্র সংক্রান্ত সবকিছুর প্রতি অত্যন্ত নেতিবাচক ধারণা পোষণ করছে। তবে, ট্রাম্প যদি বাণিজ্য সংঘাত প্রশমনের দিকে এগিয়ে যান, তাহলে ডলারের দর দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।
সোমবারে, এই পেয়ারের মূল্য আবার যেকোনো দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে, কারণ মার্কেটের সব মুভমেন্ট এখনো ট্রাম্পের মন্তব্য এবং সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে। যদি ট্রাম্প সপ্তাহান্তে কোনো বড় খবর না নিয়ে আসেন, তাহলে সোমবারও ফ্ল্যাট মুভমেন্ট অব্যাহত থাকতে পারে।
5 মিনিটের টাইমফ্রেমে, ট্রেডিংয়ের জন্য উপযুক্ত লেভেলগুলো হলো:1.0940–1.0952, 1.1011, 1.1091, 1.1132–1.1140, 1.1189–1.1191, 1.1275–1.1292, 1.1330, 1.1413–1.1424, 1.1474–1.1481, 1.1513, 1.1548, 1.1571, 1.1607–1.1622, 1.1666, 1.1689। সোমবারে ইউরোজোন বা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনের প্রকাশনা বা ইভেন্ট নির্ধারিত নেই। তবে, ট্রাম্পের বক্তব্য ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করা উচিত।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।