বুধবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বুধবার, EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্য সামান্য নিম্নমুখী হয়েছে, যা পুরোপুরি কাকতালীয় হিসেবে বিবেচনা করা যায়, কারণ পাউন্ড স্টার্লিংয়ের মূল্য মঙ্গলবারের তুলনায় নিম্নমুখী হয়েছে। এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের সম্ভাবনা বজায় রয়েছে, যা একটি নতুন অ্যাসেন্ডিং চ্যানেল গঠনের মাধ্যমে প্রতিফলিত হচ্ছে। এই পেয়ারের মূল্য বর্তমানে এই চ্যানেলের নিচের রেঞ্জের কাছাকাছি অবস্থান করছে, এবং যদি মূল্য এই রেঞ্জ ব্রেক করে নিচের দিকে যায়, তাহলে এটি দীর্ঘদিন ধরে প্রত্যাশিত দরপতন ঘটাতে পারে। মার্কিন ডলার বিভিন্ন কারণদ্বারা প্রভাবিত হওয়া সত্ত্বেও, এটির মূল্য ইতোমধ্যেই অতিরিক্ত নিম্নমুখী হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক কার্যকর হতে এখনও সময় লাগবে, এবং মার্কিন অর্থনীতি শক্তিশালী অবস্থায় রয়েছে, যা গতকাল জেরোম পাওয়েলও স্বীকার করেছেন। তাই ব্যাপকভাবে মার্কিন ডলার বিক্রির যৌক্তিকতা নেই। ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির ডলারের দরপতন কারণে ঘটছে, তবে এটি দীর্ঘস্থায়ী হবে না। ফলে, আমরা আশা করছি এই পেয়ারের মূল্য অ্যাসেন্ডিং চ্যানেল ব্রেক করে নিচের দিকে যাবে এবং মার্কিন ডলারের পুনরুদ্ধার করবে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে বুধবার তিনটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, তবে সন্ধ্যায় ফেডারেল রিজার্ভের বৈঠকের পরে এই পেয়ারের মূল্যের মূল মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে। সেই সময় ট্রেডিং করা ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। তাই নতুন ট্রেডারদের জন্য কেবল দুটি কার্যকর সিগন্যাল ছিল, যা ইউরোপীয় ট্রেডিং সেশনে গঠিত হয়েছিল। প্রথমটি 1.0940-1.0952 এরিয়ায় বাউন্সের ফলে গঠিত হয়েছিল, যা লাভজনক ছিল, এবং দ্বিতীয়টি 1.0888-1.0896 এরিয়ায় বাউন্সের ফলে গঠিত হয়েছে, যা কম স্পষ্ট ছিল এবং ব্রেক-ইভেনে ক্লোজ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, এখনো মধ্যমেয়াদে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে, তবে এই প্রবণতা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা কমছে। মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনও ইউরোর তুলনায় মার্কিন ডলারকে বেশি সমর্থন করছে, তাই আমরা এখনও এই পেয়ারের দরপতনের প্রত্যাশা করছি। তবে, ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতিমালা ডলারের মূল্যকে নিম্নমুখী করছে, যা সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের চেয়ে বেশি প্রভাব ফেলছে।
বৃহস্পতিবার, ইউরোর মূল্য যেকোনো দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে, কারণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক ও মৌলিক উপাদানগুলো বর্তমানে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টের উপর ধারাবাহিকভাবে প্রভাব ফেলছে না। তাই ট্রেডারদের ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে অ্যাসেন্ডিং চ্যানেলের নিচের রেঞ্জ থেকে ট্রেডিংয়ের ওপর দৃষ্টি দেয়া উচিত।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হল: 1.0433-1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, 1.0845-1.0851, 1.0888-1.0896, 1.0940-1.0952, 1.1011, 1.1048।
বৃহস্পতিবারের মূল ইভেন্ট হিসেবে ইউরোজোনে ক্রিস্টিন লাগার্দের বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হবে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কয়েকটি স্বল্প গুরুত্বসম্পন্ন সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। আমরা মনে করি ইউরো অতিরিক্ত ক্রয় করা হয়েছে, এবং একটি কারেকশন হতে যাচ্ছে। এই পেয়ারের মূল্য অ্যাসেন্ডিং চ্যানেল ব্রেক করে নিচের দিকে গেলে সেটি কারেকশনের সংকেত হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শুন পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।